ঢাকা ০৩:০৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মাত্র ২০০ টাকা ‘ধার’ না দেয়ায় কুপিয়ে একই পরিবারের ৪ সদস্যকে খুন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:০০:৫৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ জুলাই ২০২০
  • ১৩৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ধার চেয়েছিলেন মাত্র ২০০ টাকা। এর আগে টাকা ধার নিয়ে পরিশোধ না করায় এবার আব্দুল গনি টাকা ধার দিতে অস্বীকৃতি জানায়। বিষয়টি মেনে নিতে না পারায় রাতে বাসায় এসে গনি, তার স্ত্রীসহ ২ সন্তানকে ছুরি ও কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে সেই খুনি। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি গত শুক্রবার (১৭ জুলাই) টাঙ্গাইলের মধুপুরে ঘটে। ওই হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা সাগরকে গ্রেফতার করেছে টাঙ্গাইল র‌্যাব।

রোববার (১৯ জুলাই) বিকেলে মধুপুরের ব্রাহ্মনবাড়ি এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার সাগর ব্রাহ্মনবাড়ি গ্রামের মকবর আলীর ছেলে। দুইশ টাকা ঋণ চেয়ে না পাওয়ায় অপমান বোধ থেকে সাগর ওই চারজনকে খুন করেন বলে জানিয়ে র‍্যাব। গ্রেফতারের পর র‍্যাব-১২এর অধিনায়ক লেফটেন্টেট কর্নেল খায়রুল ইসলাম প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, নিহত আব্দুল গনির সঙ্গে সাগর আলীর সম্পর্ক দীর্ঘ দিনের। সাগর আলী, আব্দুল গনির বাসার কাছেই ভাড়া থেকে মধুপুরে রিক্সা চালান। বিভিন্ন সময় গনির কাছ থেকে সাগর সুদহারে ঋণ নিয়েছেন। ঋণের টাকা পরিশোধ করতে আগে কয়েকবার ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। গত বুধবার (১৫ জুলাই) সকালেও গনির কাছে দুইশ টাকা চান সাগর। এসময়, আব্দুল গনি তাকে ভর্ৎসনা করেন এবং তাকে কোন টাকা দেবেন না বলে জানান। এতে সাগর অপমানবোধ করেন। পরে মধুপুর বাজারে গিয়ে এক বন্ধুর সঙ্গে গনিকে হত্যার পরিকল্পনা করেন সাগর আলী। পরিকল্পনা মত ওইদিনই রাত ১০টার দিকে গনির মাস্টারপাড়া এলাকার বাসায় যান তারা। সে সময় গনির স্ত্রী ও সন্তানরা ঘুমিয়ে ছিল। গনির সঙ্গে কথা বলার এক পর্যায়ে রুমালে চেতনানাশক নিয়ে তার নাকে মুখে চেপে ধরে অজ্ঞান করে ফেলেন খুনিরা। অন্য কক্ষে থাকা গনির স্ত্রী ও সন্তানদেরও চেতনানাশক দিয়ে অজ্ঞান করা হয়। পরে সঙ্গে নিয়ে যাওয়া ছুরি এবং বাড়িতে থাকা কুড়াল দিয়ে তাদের একে একে হত্যা করা হয়। হত্যার পর ওই বাড়ি থেকে কিছু মালামাল ও টাকা লুট করে ঘরের দরজায় ও গেটে তালা দিয়ে যান তারা।

পরে সাগর ব্রাহ্মনবাড়ি আশ্রায়ণ প্রকল্পে তার বোনের ঘরে গর্ত করে লুট করা মালামাল লুকিয়ে রাখেন। শুক্রবার সকালে আব্দুল গনির বাড়ি থেকে গনি এবং তার স্ত্রী ও দুই সন্তানের লাশ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার হওয়ার পর ওই দিন রাতেই আব্দুল গনির বড় মেয়ে সোনিয়া বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামী করে মধুপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনার পর থেকেই তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে সাগরকে সনাক্ত করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পরে তাকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। এই ঘটনায় তার সঙ্গে জড়িত আরও একজনের নাম বলেছেন সাগর আলী। আরও কয়েকজন জড়িত ছিল বলে মনে করছে র‍্যাব। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি। এদিকে, সাগরকে গ্রেফতারের পর থেকেই এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

মাত্র ২০০ টাকা ‘ধার’ না দেয়ায় কুপিয়ে একই পরিবারের ৪ সদস্যকে খুন

আপডেট টাইম : ১১:০০:৫৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ জুলাই ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ধার চেয়েছিলেন মাত্র ২০০ টাকা। এর আগে টাকা ধার নিয়ে পরিশোধ না করায় এবার আব্দুল গনি টাকা ধার দিতে অস্বীকৃতি জানায়। বিষয়টি মেনে নিতে না পারায় রাতে বাসায় এসে গনি, তার স্ত্রীসহ ২ সন্তানকে ছুরি ও কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে সেই খুনি। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি গত শুক্রবার (১৭ জুলাই) টাঙ্গাইলের মধুপুরে ঘটে। ওই হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা সাগরকে গ্রেফতার করেছে টাঙ্গাইল র‌্যাব।

রোববার (১৯ জুলাই) বিকেলে মধুপুরের ব্রাহ্মনবাড়ি এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার সাগর ব্রাহ্মনবাড়ি গ্রামের মকবর আলীর ছেলে। দুইশ টাকা ঋণ চেয়ে না পাওয়ায় অপমান বোধ থেকে সাগর ওই চারজনকে খুন করেন বলে জানিয়ে র‍্যাব। গ্রেফতারের পর র‍্যাব-১২এর অধিনায়ক লেফটেন্টেট কর্নেল খায়রুল ইসলাম প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, নিহত আব্দুল গনির সঙ্গে সাগর আলীর সম্পর্ক দীর্ঘ দিনের। সাগর আলী, আব্দুল গনির বাসার কাছেই ভাড়া থেকে মধুপুরে রিক্সা চালান। বিভিন্ন সময় গনির কাছ থেকে সাগর সুদহারে ঋণ নিয়েছেন। ঋণের টাকা পরিশোধ করতে আগে কয়েকবার ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। গত বুধবার (১৫ জুলাই) সকালেও গনির কাছে দুইশ টাকা চান সাগর। এসময়, আব্দুল গনি তাকে ভর্ৎসনা করেন এবং তাকে কোন টাকা দেবেন না বলে জানান। এতে সাগর অপমানবোধ করেন। পরে মধুপুর বাজারে গিয়ে এক বন্ধুর সঙ্গে গনিকে হত্যার পরিকল্পনা করেন সাগর আলী। পরিকল্পনা মত ওইদিনই রাত ১০টার দিকে গনির মাস্টারপাড়া এলাকার বাসায় যান তারা। সে সময় গনির স্ত্রী ও সন্তানরা ঘুমিয়ে ছিল। গনির সঙ্গে কথা বলার এক পর্যায়ে রুমালে চেতনানাশক নিয়ে তার নাকে মুখে চেপে ধরে অজ্ঞান করে ফেলেন খুনিরা। অন্য কক্ষে থাকা গনির স্ত্রী ও সন্তানদেরও চেতনানাশক দিয়ে অজ্ঞান করা হয়। পরে সঙ্গে নিয়ে যাওয়া ছুরি এবং বাড়িতে থাকা কুড়াল দিয়ে তাদের একে একে হত্যা করা হয়। হত্যার পর ওই বাড়ি থেকে কিছু মালামাল ও টাকা লুট করে ঘরের দরজায় ও গেটে তালা দিয়ে যান তারা।

পরে সাগর ব্রাহ্মনবাড়ি আশ্রায়ণ প্রকল্পে তার বোনের ঘরে গর্ত করে লুট করা মালামাল লুকিয়ে রাখেন। শুক্রবার সকালে আব্দুল গনির বাড়ি থেকে গনি এবং তার স্ত্রী ও দুই সন্তানের লাশ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার হওয়ার পর ওই দিন রাতেই আব্দুল গনির বড় মেয়ে সোনিয়া বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামী করে মধুপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনার পর থেকেই তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে সাগরকে সনাক্ত করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পরে তাকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। এই ঘটনায় তার সঙ্গে জড়িত আরও একজনের নাম বলেছেন সাগর আলী। আরও কয়েকজন জড়িত ছিল বলে মনে করছে র‍্যাব। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি। এদিকে, সাগরকে গ্রেফতারের পর থেকেই এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।